সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র। মক্কা এবং মদিনায় এদেশ অবস্থান করায় মুসলমানদের কাছে পবিত্র ভূমি হিসেবে পরিচিত সৌদি আরব। ইসলাম প্রধান এ দেশটিতে রয়েছে 96000 মসজিদ, যার আজানের ধ্বনিতে মুখরিত হয় প্রতি ওয়াক্ত সালাত। কিন্তু হঠাৎ মসজিদে উচ্চস্বরে আজান নিয়ে কথা বলায় গত সপ্তাহে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে সৌদি আরবের ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তারা বলেন মসজিদের লাউডস্পিকার উচ্চস্বরে আওয়াজ করে আজান দেওয়া যাবে না। সর্বোচ্চ তিন ভাগের এক ভাগ বাড়ানো যাবে লাউড স্পিকারের সাউন্ড। তবে রেস্তুরা ও অন্যান্য অনুষ্ঠানগুলোর উচ্চস্বরে গান-বাজনার আওয়াজ নিয়ে মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ রইলেন নিশ্চুপ। এমন একটি সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রটির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে মনে করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। বিষয়টি কেন্দ্র করে অনেক সৌদি বাসী রেস্তোরাঁ ও ক্যাফেটেরিয়ার গুলোর উচ্চস্বরে গান বাজানোর বিপক্ষে গড়ে তুলেন সামাজিক গণআন্দোলন। তাদের মতে গান-বাজনা যে উচ্চস্বরে বাজছে তা আগে বন্ধ করা উচিত মসজিদের আজানের শব্দ কমানোর পূর্বে। উচ্চস্বরে আযান যদি সমস্যার কারণ হয়ে থাকে, তবে উচ্চস্বরে গান তো তার থেকেও বেশি সমস্যার কারণ হবার কথা। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা উচ্চস্বরে আজানের শব্দ শুনে অন্তরাত্মা প্রশান্ত হয়। আর উচ্চ মিউজিকে হাই বিটে গান যখন চলে তখন তাদের অন্তরাত্না কলুষিত হয়। কিন্তু এতসব আন্দোলন আরও প্লেকার্ড দিয়েও কোন লাভ হল না।
|
Abdullatif Al-Sheikh
|
সৌদি আরবের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ পুরো বিষয়টি উপেক্ষা করে এবং উল্টে যারা যারা এই সিদ্ধান্তের সরকারের সমালোচনা করেছেন ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন তাদের দেশবিরোধী দেশের শত্রু বলে আখ্যা দিয়েছেন। কি কারণে সৌদি সরকার এই পদক্ষেপ নিলেন আর কেনইবা আযানের শব্দ হঠাৎ সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ালো, দেশের মানুষের জন্য এমন চিন্তা কোথা থেকে আসলো। এর স্পষ্ট কারণ এখনো জানা যায়নি। আব্দুল লতিফ বলেন আমাদের কাছে অনেক অবিভাবকরা অভিযোগ করেছেন যে মসজিদের উচ্চস্বরে আজানের ধ্বনিতে শিশুদের ঘুমের সমস্যা হয়। "নামাজের জন্য আযান এর প্রয়োজনীয়তা নেই সময় দেখি নামাজ পড়া যায় এই বলে নামাযের উদ্দেশ্যে তিনি তাঁর বক্তব্য জাহির করে গণমাধ্যমে"। এমন বক্তব্যে ইসলামবিরোধী মনে করে সমালোচনা করায় উল্টো কয়েকজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। মনের ভাব প্রকাশ করার স্বাধীনতা থাকলেও সরকারের সমালোচনা করার স্বাধীনতা নেই সৌদি নাগরিকদের। এছাড়া সৌদি সরকারকে নিয়ে শুধুমাত্র সমালোচনা করার দায়ে আটক করা হয় হাজার হাজার সমালোচকদের। ইসলামের পূণ্যভূমি মক্কা-মদিনার দেশ সৌদি আরব যেখান থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর জন্ম মৃত্যু এবং তার দীর্ঘ নবুওতের জীবন। তিনি শিখিয়েছেন কিভাবে সালাত আদায় করতে হবে তিনি শিখিয়েছেন কিভাবে আযান দিতে হবে যা পুরো বিশ্বে সমাদৃত।হাজার হাজার কোটি কোটি মুসলমানের মনিকোঠা বসবাস করে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান। আর যেই মাত্র সৌদি আরবের এই সংবাদটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলো পুরো বিশ্বজুড়েই নিন্দার ঝড় উঠেছে। সৌদি আরবের অধিকাংশ নাগরিকরা আতঙ্কগ্রস্ত যে প্রিন্স সালমানের নেতৃত্বে দিনদিন মত প্রকাশের স্বাধীনতা পড়ছে হুমকির মুখে এবং মুসলমান ধর্মের যাবতীয় বিধি-বিধানও পড়ছে হুমকির মুখে। তাদের শুধু এখন একটাই অপেক্ষা কখন মহান প্রভু হুকুম করবেন আর এই অন্ধকার কেটে আলোর পরিস্ফুটন ফুটবে। মসজিদে মসজিদে মাইকে থেকে হাইয়া আলাস সালাহ, হাইয়া আলাল ফালাহ, ধ্বনি শোনা যাবে।